নির্মম পরিহাস
-নীলোৎপল সিকদার
জ্বলেছো সারাটি জীবন
পুড়ে পুড়ে হয়েছো অঙ্গার,
অধিকারহীনতায় কেঁদেছো দিনরাত্রি,
কেউ তোমার দিকে ফিরেও তাকায়নি…
করেছো নিপুণ হাতে গৃহকর্ম- সুচারু,
কঠোর কায়িক শ্রমে ঝরিয়েছ-ঘাম,
মাথা নীচু করে ভয়ে ভয়ে থেকেছো-সারাক্ষণ,
মন গলেনি তবু কারো-দেখায়নি দরদ…
মমতার হাতে করেছো সকলের- সেবা যত্ন
বিনিময়ে পেয়েছো লাথি-ঝাঁটা
তুচ্ছতাচ্ছিল্য-অবেহলা-ঘৃণা,
ধন্য তুমি গৃহ লক্ষী-স্বামীর বউ…
পৃথিবীর সর্বোত্তম মহতী কর্ম করেছ
কঠিন কঠোর প্রসব ব্যথা সয়ে,
মহা বীরের মত দিয়েছ সন্তানের জন্ম,
তবু স্বামীর ভালোবাসা জোটেনি কপালে,
তোমাকে করেছে যৌনদাসী
ভেবেছে বংশ রক্ষার যৌনযন্ত্র…
সন্তান উৎপাদনের ক্ষেত্র…
সারাটি জীবন যাতনা যন্ত্রণা
দিয়েছে যে মানুষটি
তাকে কখনো স্বামী মনে হয়নি,
মনেও হয়নি সহানুভূতিশীল বন্ধু,
মনে হয়েছে দেও-দৈত্য-দানব…
অথচ দেখো ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস
সেই মানুষটি মারা গেলে
তোমাকেই বহন করতে হয় বৈধব্য দশা,
পরতে হয় বিধবার পোষাক
সাজতে হয় বিধবার সাজে,
হায়রে সর্বংসহা মহীয়সী নারী
আর কত কাল!
আর কত কাল…
অপূর্ব হয়েছে।